কলকাতা, ৩১ মার্চ : হাই হ্যালো ছোড়ো হরে কৃষ্ণ বোলো। কে এই দেবতনয়? নেহাতই ছোট্ট এক শিশু? নাকি শ্রীকৃষ্ণের কোনও অবতার? অনর্গল বলে চলেছে কৃষ্ণ কথা! তার মুখ থেকে ধর্ম কথা শুনে মোহিত সকলে। এ তো বাবা মায়ের শেখানো কথা নয়, মন থেকে বলছে সব কিছু। ছোটদের মধ্যে নাকি ভগবান থাকে! এ শিশুকে দেখলে, তার কথা শুনলে সেকথা বিশ্বাস করতে বড্ড ইচ্ছে হয়।কৃষ্ণ নামে বিভোর। কৃষ্ণ প্রেমে পাগল। ঠোঁটের আগায় শ্রীকৃষ্ণের প্রতিটি কাহিনী। তার কৃষ্ণপ্রেমে অবাক সকলে। সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল তার প্রতিটি কথা। আধো আধো বোল। কিন্তু তার গভীরতা যে কোনও বিজ্ঞ ব্যক্তির থেকে কোনও অংশে কম নয়। তার আত্মবিশ্বাস, তার মত প্রতিষ্ঠার ধরণ,।সবাইকে হতবাক করে ছাড়ছে। অনায়াসে সে বলতে পারে গীতার মাহাত্ম্য। বলতে পারে পৌরাণিক নানা কাহিনী। যেন ঈশ্বরেরই বরপুত্র।
নচেৎ এই বয়সে এতো কথা সে জানালো কিভাবে!রিয়ালিটি শোয়ের হোস্ট বলুন কিংবা বিমান সেবিকা। মুহুর্তে সে মন জিতে নিচ্ছে সকলের। বয়স চার বছর। কিন্তু সে কথা বলে যেকোনও সর্বজ্ঞানী বিদ্বজনের মতো। মুন্ডিত মস্তক। গলায় কখনও রুদ্রাক্ষ বা কখনও তুলসি কাঠের মালা, সঙ্গে মাদুলি। কপালে চন্দনের তিলক। চোখ দুটি থেকে ঝড়ে পড়ছে আত্মবিশ্বাস। নাম তার ভাগবত দাস ব্রহ্মচারী। যেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নেমে এসেছেন ভক্তদের মাঝে। অনেকেই মালা পরিয়ে ভগবান জ্ঞানে পুজো করছে তাকে।
খেলাধুলোর বয়সে শ্রীকৃষ্ণই যেন তার ধ্যান জ্ঞান। সে ছুটছে, লাফাচ্ছে শ্রীকৃষ্ণকে সঙ্গী করে। তার স্বপনে জাগরনে প্রশ্বাসে নিঃশ্বাসে শুধুই শ্রীকৃষ্ণ। সম্বোধনে বলেন, রাধে রাধে। কাঁধ থেকে ঝুলছে কাপড়ের ঝুলি। তাতে রাখা জপমালা। সময় পেলেই মালা জপে ভাগবত। নিজে পড়ে শ্রীমৎভগবত গীতা। দেশ জুড়ে ঘুরে ঘুরে প্রচার করে গীতার মাহাত্ম্য। বলতে পারে, ইংরেজরা সোনার ভারত লুট করেছে। তবুও আমাদের গীতার মতো রত্ন আর কারও কাছে নেই।
সম্প্রতি তাকে দেখা গেছে সোনির রিয়েলিটি শো সুপারস্টার সিঙ্গারে। সেখানে নেহা কক্কর তাকে হ্যালো বলে সম্বোধন করেন। সঙ্গে সঙ্গেই ভাগবত বলে, হাই হ্যালো ছোড়ো, হরে কৃষ্ণ বোলো।চারদিকে এতো ক্যামেরা, এতো আলো। অথচ সেসব নিয়ে সে বিচলিত নয় একটুও। যেন স্টেজ পারফরম্যান্স তার সহজাত। নেহা জানতে চেয়েছিলেন,তার বাড়ি কোথায়।উত্তরে ভাগবত বলে,একদিন দেবরাজ ইন্দ্র প্রচুর বৃষ্টি করিয়েছিল। ভেসে যায় চারদিক। জীবকুলকে বাঁচাতে তখন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অনামিকার মাধ্যমে গোবর্ধনকে তুলে ধরেছিলেন। সেই গোবর্ধনে আমি থাকি। ভাবুন একবার! এই ছোট্ট শিশু জানিয়ে দেয়, অন্য খাবার তো বটেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে না দিয়ে সে জলপানও করে না।
তার মতে, আগে সব খাবার ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে নিবেদন কর। তারপর তাঁর প্রসাদ গ্রহণ কর। ভাগবত নিরামিষ পিৎজাও দেয় তার আরাধ্য দেবতাকে। কতটা ভক্তি কতটা ভালোবাসা বুঝুন। সে অনায়াসে দু হাত প্রসারিত করে বলতে পারে, শ্রীকৃষ্ণকে সবাই ভালোবাসে এতোটাই। সে জায়গায়, তার প্রতি সকলের ভালোবাসা কনামাত্র। অর্থাৎ সবক্ষেত্রেই এগিয়ে রাখা ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে। তাতেই তার আনন্দ। কেন এই বয়স থেকেই কৃষ্ণপ্রেমে ডুবে রয়েছে সে? উত্তরে সে বলেন, আমাদের জীবন অনির্দিষ্ট। কখন কার মৃত্যু আসবে তা আমরা কেউ জানি না। তাই সেই মৃত্যু আসার আগে যত পারে কৃষ্ণ নাম জপ করে নাও। তাতেই আনন্দ তাতেই মুক্তি। ছোট্ট এই শিশুর মতে, খেলনা কিভাবে চলবে তা লেখা থাকে ম্যানুয়ালে। তেমনই গীতা আমাদের জীবনের ম্যানুয়াল।
।। প্রথম কলকাতা ।।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan